অনলাইন ডেক্স:
গোদাগাড়ী উপজেলায় সরকারি খাস পুকুর ইজারা প্রদানে গোদাগাড়ী সিনিয়র সহকারী জজ আদালত হইতে নিষেধাজ্ঞার আদেশ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে এ সংক্রান্ত আদেশ এসে পৌছায় গোদাগাড়ীতে।
গোদাগাড়ী সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের ৪০২/২০২১ নং মামলায় উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: জানে আলম, সদস্য সচিব ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোছা: তাছমিনা খাতুন, সদস্য উপজেলা কৃষি অফিসার মো: শফিকুল ইসলাম, উপজেলা মৎস অফিসার বরুন কুমার মন্ডল ও উপজেলা সমবায় অফিসার আব্দুর রশিদ কে বিবাদী করা হয়েছে এবং তাদেরকে বাংলা ১৪২৮-১৪৩০ সন মেয়াদে খাস পুকুর ইজারা প্রদান কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। মামলাটি করেন গোদাগাড়ী সরমংলা মৎস্যচাষি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি মো. ইব্র্রাহিম।
পরবর্তীতে ২ আগস্ট পুনরায় দরপত্র আহ্বান করা হয় এবং প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী প্রকৃত মৎস্যজীবি সমিতিসহ বিভিন্ন যুব সমিতি/সংগঠনকে দরপত্র প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে উপজেলা প্রশাসন। যা সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত। নীতিমালা অনুযায়ী প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে শুধুমাত্র মৎস্যজীবি সমিতি টেন্ডার কার্যক্রম অংশগ্রহণ করতে পারবে। পরবর্তী পর্যায়ে ২০১২ সালের সংশোধনী নীতিমালা অনুযায়ী মৎস্য চাষের উদ্দেশ্যে নিবন্ধিত সমিতি/সংগঠনকে খাস পুকুর ইজারা দেয়ার নিয়ম থাকলেও গোদাগাড়ীর খাস পুকুর লীজ কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি।
মামলার বাদী ও ভুক্তভোগী মো. ইব্রাহিম আলী জানান, সম্পূর্ণ অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে এক শ্রেণির অসাধু ব্যাক্তিবর্গ উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মুক্তার আলী (লিটন) কে ম্যানেজ করে নীতিমালা অনুসরণ না করে এই টেন্ডার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। যা সম্পূর্ণ নিয়ম ও আইন পরিপন্থী। সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী যে কোন নিলাম ডাক/টেন্ডার প্রকাশ্য ঘোষণার নিয়ম থাকলেও এবারের খাস পুকুর ইজারায় তা মোটেও অনুসরণ করা হয়নি মর্মেও অভিযোগ পাওয়া যায়।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোছা. তাছমিনা খাতুন সংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তিবর্গের উপি’তিতে টেন্ডার কার্যক্রম পরিচালনা করেননি। নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার করে একক সিদ্ধান্তে টেন্ডার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এ নিয়েও স্থানীয় মৎস্যনজীবি সংগঠনের সদস্যদের মধ্যেও চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোছা. তাছমিনা খাতুন পুকুর চাষীদের নিজ সরকারি কোয়ার্টারে ডেকে পুকুর পাইয়ে দেয়ার নামে দর কষাকষি করছেন মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বছর এ সময়ে সরকারি জলমহাল থেকে হয়েছিল প্রায় দেড় কোটি টাকা। অথচ এ বছর সরকারি
জলমহাল থেকে কোন রাজস্ব আদায় করতে পারেনি উপজেলা ভূমি অফিস। মামলার বাদী ইব্রাহিম আলী আরও অভিযোগ করেন, মামলা তুলে নেয়ার জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোছা. তাছমিনা খাতুন বিভিন্নভাবে আমাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন।
মামলার বাদী মো. ইব্রাহিমের আইনজীবী মো. শামসুল হক বলেন, জলমহাল নীতিমালায় উল্লেখ রয়েছে, শুধুমাত্র মৎস্যজীবীরা ইজারায় প্রতিযোগিতা করবে। পক্ষান্তরে মৎস্যচাষি কিংবা অন্যরা শুধুমাত্র ১৫০০ টাকা একর প্রতি সরাসরি লিজ পাবে। এ ক্ষেত্রে সরকারি জলমহালের আশপাশের গরিব মানুষ বা মৎস্যচাষিরা ওই পুকুর লিজ পাবে। কিন্তু ইজারার বিজ্ঞপ্তির ৮নং পয়েন্টে মৎস্যজীবী ও মৎসচাষি সমিতিকে একসঙ্গে শিডিউল কাটতে বলা হয়েছে, যা নীতিমালা বহির্ভূত।
আইনজীবী
শামসুল হক বলেন, শুধু তাই নয়, বিজ্ঞপ্তিতে জলমহাল ইজারার ফলাফল চূড়ান্ত
হওয়ার পর থেকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে ইজারা গ্রহণকারীদের চুক্তিবদ্ধ হতে
বলা হয়েছে। অথচ নীতিমালায় ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার কথা উল্লেখ
রয়েছে। এ দুটি সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘনের কারণে মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট)
ইব্রাহিম বাদী হয়ে রাজশাহীর গোদাগাড়ী সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে পাঁচ
কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব তাছমিনা খাতুনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া জায়নি।
সুত্র পদ্মা টাইমস24.কম
কাকন জার্নাল/তরিকুল ইসলাম









No comments:
Post a Comment